১৪৯ রিফিউজি পরিবারের ১৫৭.৩০ একর জমি বেদখল

প্রকাশঃ মে ১৩, ২০১৭ সময়ঃ ৮:২৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:২৩ অপরাহ্ণ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

সরকারের বন্দোবস্ত করে দেয়া ১৫৭.৩০ একর খাস জমির দখল না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার হরিশ্বর তালুক মৌজার ১৪৯ রিফুজি পরিবার।

আজ শনিবার ভুমি দস্যুদের থেকে জমি উদ্ধারে কুড়িগ্রাম-রংপুর ছিনাই এলাকায় মানববন্ধন করেছে ভুমিহীন রিফুজি পরিবারের সদস্যরা।

ভুমিহীন রিফুজি পরিবারগুলো জানায়, ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর আসাম থেকে আসা ১শ ৪৯টি রিফুজি পরিবারকে পুর্ণবাসন করার জন্য রাজারহাট উপজেলার হরিশ্বর তালুক মৌজার সি, এস-২৫ খতিয়ানের ২০৭ একর জমি হুকুম দখল করে ত্রাণ পুর্ণবাসন মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দেয় সরকার। এরপর ত্রাণ ও পুর্ণবাসন বিভাগ হইতে ২০৭ একরের মধ্যে ১৫৭.৩০ একর জমি ১৪৯ জন ভুমিহীন কৃষকের মাঝে ১৯৫৫ সালের ১৯ এপ্রিল রংপুর জেলা প্রশাসক বরাদ্দ দেয় এবং তাদের নামে এস,এ রেকর্ড হয়।

রিফুজি পরিবারের হোসাইন মিয়া (৭৫) বলেন, সরকারের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়ার পরেও ভুমি দস্যুদের প্রাণ নাশের হুমকীর কারণে আমরা রিফুজি পরিবারগুলো সে জমিতে যেতে পারছি না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। আমরা সরকারের নিকট আমাদের কাছে বরাদ্দকৃত জমি ফিরিয়ে চাই।

রিফুজি পরিবারকে দেয়া বন্দোবস্ত জমি

এ ঘটনায় নিহত শহীদ উদ্দিনের স্ত্রী মালেকা বেওয়া (৭০) জানান, ভুমি দস্যুরা জমি দখলে নিতে আমার স্বামীসহ ৯ জনকে হত্যা করেছে। এমনকি দুই জনের লাশ পর্যন্ত ফেরত দেয় নাই। আমি আমার স্বামীর নামে বরাদ্দকৃত জমি ফেরত চাই।

রিফুজি পরিবারের নিজাম উদ্দিন, নওশেদ আলী, লালু শেখ, তাইজ উদ্দিন ও ডালিমন বেওয়া জানান, ভুমি দস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় এবং জমিতে গেলে অব্যাহত প্রাণ নাশের হুমকী দেয়ায় আমরা জমিতে যেতে পারছি না। আমরা রিফুজিরা কেউ ভ্যানগাড়ী চালিয়ে, কেউ দিনমজুরের কাজ করে খুব কষ্টে দিন যাপন করছি। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আকুল আবেদন জানাই, তিনি যেনো ভুমি দস্যুদের হাত থেকে আমাদের নামে বরাদ্দকৃত জমি উদ্ধার করে দেয়।

এদিকে জমি দখলে রাখা রমজান আলী জানান, এখানে কোনো খাস জমি নাই। এগুলো আমাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি।

এ ব্যাপারে রাজারজাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরজামান হক বুলু জানান, মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে রিফুজি ১৪৯টি পরিবার হরিশ্বর তালুক মৌজা থেকে ভুমিদস্যুদের অত্যাচারে বিতারিত হয়ে ছিনাই ইউনিয়নের মহিদেব মীরের বাড়ি এলাকায় বসবাস শুরু করে। বর্তমানে পরিবারগুলো অসহায় অবস্থায় দিন যাপন করছে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, রিফুজি কিংবা ভুমিহীনদেরকে সরকারী খাস জমি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়ার পর এ জমির মালিক অন্য কেউ হতে পারবে না। কিন্তু বন্দোবস্ত দেয়া জমির রক্ষণা-বেক্ষণের দায়িত্ব তাদের। তবে ভুমিহীনরা যদি আদালতের শরনাপন্ন হয় সেক্ষেত্রে সরকার সহযোগী বাদী হয়ে ভুমিহীনদের সহযোগীতা করবে।

প্রতিক্ষণ/এডি/সাই

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G